কাতার প্রবাসী জুয়েল চৌধুরী নিজেকে পরিচয় দেন চিকিৎসক ও ব্যবসায়ী হিসেবে। আর সেই পরিচয়ের আশ্রয়ে করছেন বিবাহ প্রতারণা। বিয়ের দিন তারিখ চূড়ান্ত করে সম্পন্ন করেন নানা আনুষ্ঠানিকতা। এর মাঝে কনে ও কনেপক্ষের আত্মীয়দের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে হাতিয়ে নেন মোটা অঙ্কের টাকা ও স্বর্ণালংকার। তবে বিয়ের ঠিক আগ মুহূর্তে পালিয়ে কাতার চলে যান ডা. জুয়েল চৌধুরী।
এভাবেই একাধিক নারীর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার প্রতারণা করে আসছেন তিনি। জানা গেছে, গত ৫ জুলাই ময়মনসিংহের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারের পেশায় চিকিৎসক মেয়ের সঙ্গে জুয়েল চৌধুরীর বিয়ের দিন ধার্য্য ছিল। এর আগে সনাতন ধর্ম অনুযায়ী, হলুদ ও আশীর্বাদের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
বিয়ে করার শর্ত অনুযায়ী, কনেপক্ষ জুয়েল চৌধুরীকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা মূল্যের ৪০ ভরি গহনা, ৫ লাখ টাকা মূল্যের ফার্নিচার এবং ৩ লাখ টাকা মূল্যের কাপড় ও কসমেটিক্স পণ্য প্রদান করে। কনেপক্ষ মেয়ের স্বর্ণালংকার, পোশাক এবং প্রায় দুই হাজার অতিথি আপ্যায়নের জন্য খাবার ও কনভেনশন হল বুকিং দেন বিয়ের চূড়ান্ত পর্ব আয়োজনের জন্য।
আর ঠিক তখনই পলাতক হয়ে যান চতুর প্রতারক ডা. জুয়েল চৌধুরী। ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতারক ডা. জুয়েল চৌধুরীর বিরুদ্ধে খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। রোববার (৯ জুলাই) আদালতের মাধ্যমে মামলা রুজু করা হবে। তবে দৈনিক কালবেলার অনুসন্ধান বলছে, এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে কাতার পালানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ডা. জুয়েল চৌধুরী।
সুবিধাজনক সময়ে কাতারের প্লেনে চড়ে বসবেন তিনি। তবে জুয়েল চৌধুরীর বিবাহ প্রতারণার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও গত বছর চট্টগ্রামের আরেক নারী চিকিৎসকের সঙ্গে এমন প্রতারণা করেন জুয়েল চৌধুরী। বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে সম্পর্ক গড়ে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে নগদ অর্থ এবং স্বর্ণালংকারের মতো দামি জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়েছিলেন সেখান থেকেও।
এই প্রতারণায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে ভুক্তভোগী সেই নারী আত্মহ’ত্যার চেষ্টাও করেছিলেন। ডা. জুয়েল চৌধুরী যেমন বিবাহ প্রতারণায় সিদ্ধহস্ত তেমনি জুয়েলের বাবা মৃদুল চৌধুরী ওরফে বিকাশ চৌধুরী চট্টগ্রামকেন্দ্রিক স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সঙ্গে জড়িত।
মৃদুল চৌধুরী কাতারে স্বর্ণ চোরাকারবারি হিসেবে পরিচিত। এসব বিষয়ে জানতে ডা. জুয়েল চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার বাংলাদেশি নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। কাতারের নম্বরে থাকা হোয়াটস অ্যাপে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।